ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেতাগীতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ঘুস গ্রহণ: তদন্ত কমিটি গঠন

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ৯ ভিউ

ডা: ফাহমিদা লস্কর(ইউএইচএফপিও)— বেতাগী,বরগুনা।

বেতাগী(বরগুনা)প্রতিনিধি

বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের অর্থ লেনদেনের ভিডিও ভাইরালের পর অভিযোগ উঠে, গণনা করা টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এ নিয়ে গত বুধবার ‘ভিডিও ভাইরাল: স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস গ্রহণের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পরের দিন বৃহস্পতিবার বরগুনা জেলা সিভিল সার্জনের কাযার্লয় থেকে এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি। বরগুনা সিভিল সার্জন ডা: মো মোহাম্মদ ফজলুল হক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রজ্ঞাপণ সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনায়েম সাদকে ওই তদন্ত কমিটির প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসাথে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন— উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(বরগুনা সদর) ডা: শায়লা ফেরদৌস আহসান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(বামনা) ডা. মো. মনিরুজ্জামান।

এদিকে, সত্যতা স্বীকার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত (ফার্মাসিষ্ট) কৃষ্ণ কুমার পাল এক স্বাক্ষাতকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন— ভিডিওর ঘটনাটি সম্পূর্ণই সত্য। সেদিন ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুসের টাকাই নেয়া হয়েছিলো। আমি স্যারের অফিস কক্ষের মধ্যেই তার(ফাহমিদা লস্কর) নির্দেশে ঠিকাদাররে কাছ থেকে ওই টাকার বান্ডিলটি গ্রহণ করি। এবং স্যার আমাকে গননা করে রাখতে বলায়, আমার অফিসে বান্ডিলটি গননা করে ৫০ হাজার টাকা রেখে দেই। অফিস শেষে স্যার( স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) টাকা চাইলে ওই টাকা আমি তার কাছে দিয় দেই। তিনি আরো বলেন, আমি ঘুসের টাকার লেনদেনের বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে সত্যতা স্বীকার করায়, চাকরী নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। কারন স্যার(ফাহমিদা লস্কর) বলেছেন তার হাত বেশ লম্বা।

বেতাগী উপজেলা নিবার্হী অফিসার ফারুক আহমেদ বলেন,‘ তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ হলে বিধি অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরগুনা সিভিল সার্জন ডা: মো মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন,‘ যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পরের দিনই তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ একই কথা বলেছেন বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের অর্থ লেনদেনের (৬মিনিটি ৪৪ সেকেন্ডের) একটি ভিডিও যুগান্তরের হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা ও শোনা যায়, পথ্য ও ষ্টেশনারি সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদারি (প্রতিনিধি) মো. রেজাউল ইসলাম মামুন খান বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশের পর, ছয়মাসের খাবারের মোট বিলের লভ্যাংশ পার্সেন্টিজ অনুযায়ী(স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কত টাকা এসছে এ নিয়ে তাদের দুইজনের মধ্যে কথপকথন হয়। এক পর্যায়ে বেতাগী হাসপাতালে কর্মরত (ফামার্সিষ্ট) কৃষ্ণ কুমার পালকে তার অফিসে ডেকে মামুন খানের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিলটি গুনে তার কাছে রাখতে নির্দেশ দেন। পরে কৃষ্ণ তার অফিস কক্ষে গিয়ে টাকা ভর্তি খামটি খোলেন এবং টাকা গননা করে রেখে দেন।

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

বেতাগীতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ঘুস গ্রহণ: তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট টাইম ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

বেতাগী(বরগুনা)প্রতিনিধি

বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের অর্থ লেনদেনের ভিডিও ভাইরালের পর অভিযোগ উঠে, গণনা করা টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এ নিয়ে গত বুধবার ‘ভিডিও ভাইরাল: স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস গ্রহণের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পরের দিন বৃহস্পতিবার বরগুনা জেলা সিভিল সার্জনের কাযার্লয় থেকে এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি। বরগুনা সিভিল সার্জন ডা: মো মোহাম্মদ ফজলুল হক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রজ্ঞাপণ সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনায়েম সাদকে ওই তদন্ত কমিটির প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসাথে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন— উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(বরগুনা সদর) ডা: শায়লা ফেরদৌস আহসান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(বামনা) ডা. মো. মনিরুজ্জামান।

এদিকে, সত্যতা স্বীকার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত (ফার্মাসিষ্ট) কৃষ্ণ কুমার পাল এক স্বাক্ষাতকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন— ভিডিওর ঘটনাটি সম্পূর্ণই সত্য। সেদিন ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুসের টাকাই নেয়া হয়েছিলো। আমি স্যারের অফিস কক্ষের মধ্যেই তার(ফাহমিদা লস্কর) নির্দেশে ঠিকাদাররে কাছ থেকে ওই টাকার বান্ডিলটি গ্রহণ করি। এবং স্যার আমাকে গননা করে রাখতে বলায়, আমার অফিসে বান্ডিলটি গননা করে ৫০ হাজার টাকা রেখে দেই। অফিস শেষে স্যার( স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) টাকা চাইলে ওই টাকা আমি তার কাছে দিয় দেই। তিনি আরো বলেন, আমি ঘুসের টাকার লেনদেনের বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে সত্যতা স্বীকার করায়, চাকরী নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। কারন স্যার(ফাহমিদা লস্কর) বলেছেন তার হাত বেশ লম্বা।

বেতাগী উপজেলা নিবার্হী অফিসার ফারুক আহমেদ বলেন,‘ তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ হলে বিধি অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরগুনা সিভিল সার্জন ডা: মো মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন,‘ যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পরের দিনই তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ একই কথা বলেছেন বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের অর্থ লেনদেনের (৬মিনিটি ৪৪ সেকেন্ডের) একটি ভিডিও যুগান্তরের হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা ও শোনা যায়, পথ্য ও ষ্টেশনারি সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদারি (প্রতিনিধি) মো. রেজাউল ইসলাম মামুন খান বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশের পর, ছয়মাসের খাবারের মোট বিলের লভ্যাংশ পার্সেন্টিজ অনুযায়ী(স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কত টাকা এসছে এ নিয়ে তাদের দুইজনের মধ্যে কথপকথন হয়। এক পর্যায়ে বেতাগী হাসপাতালে কর্মরত (ফামার্সিষ্ট) কৃষ্ণ কুমার পালকে তার অফিসে ডেকে মামুন খানের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিলটি গুনে তার কাছে রাখতে নির্দেশ দেন। পরে কৃষ্ণ তার অফিস কক্ষে গিয়ে টাকা ভর্তি খামটি খোলেন এবং টাকা গননা করে রেখে দেন।