ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগে গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ১০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪ ভিউ

ডেস্ক নিউজ:

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগে চব্বিশের গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ। এ বিচার না হলে শহিদের আত্মা কষ্ট পাবে। তাদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলার, সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে চলার সুযোগ পেয়েছি তাদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি বেনজীরের ফাঁদে পা দেবেন না। শনিবার সকালে কক্সবাজারে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ প্রায় পনেরো বছর পর কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


চব্বিশের অভ্যুত্থানকারী প্রজন্মকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আমরা আমাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। এটাই সত্য কথা। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের ধারাবাহিকতায় তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটা ফ্যাসিজমের ওপর দিয়েছে এবং সফল হয়েছে। আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গ টেনে জামায়াত আমির বলেন, অনেকে আবার নিজেরা কৃতিত্ব দাবি করে। আমি মাস্টারমাইন্ড, অমুক ভাই মাস্টারমাইন্ড, তমুক নেতা মাস্টারমাইন্ড। মহাপরিকল্পনাকারী মহান রাব্বুল আলামিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে কোনো মাস্টারমাইন্ড আমরা বিশ্বাস করি না।

নিজ দলের প্রতি অবিচারের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, আইনের অঙ্গনে এসে যারা বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছে, প্রধান বিচারপতির দরজায় এসে লাথি দিয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাদের সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিল। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদের ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আমরা অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট। সবগুলো খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ’২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ।

ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ আমাদের সবার-মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের দেশে মেজরিটি-মাইনরিটি একেবারেই মানি না। বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তারা এ দেশের মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারও ওপর জোর খাটানোর কোনো অধিকার রাখে না। এখানে মেজরিটি-মাইনরিটি বলে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের ভাই-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে। আর দোষ দেওয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্ট করে নাম-ঠিকানা দিয়ে আমাদের সাহায্য করুন। আপনাদের কথা দিচ্ছি, ন্যয়বিচার আমরা আপনাদের হাতে তুলে দেব। আমরা নিশ্চিত এই অপকর্মের সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীসহ দলের শীর্ষ নেতারা।

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

আগে গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ

আপডেট টাইম ১০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ডেস্ক নিউজ:

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগে চব্বিশের গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ। এ বিচার না হলে শহিদের আত্মা কষ্ট পাবে। তাদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলার, সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে চলার সুযোগ পেয়েছি তাদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি বেনজীরের ফাঁদে পা দেবেন না। শনিবার সকালে কক্সবাজারে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ প্রায় পনেরো বছর পর কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


চব্বিশের অভ্যুত্থানকারী প্রজন্মকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আমরা আমাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। এটাই সত্য কথা। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের ধারাবাহিকতায় তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটা ফ্যাসিজমের ওপর দিয়েছে এবং সফল হয়েছে। আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গ টেনে জামায়াত আমির বলেন, অনেকে আবার নিজেরা কৃতিত্ব দাবি করে। আমি মাস্টারমাইন্ড, অমুক ভাই মাস্টারমাইন্ড, তমুক নেতা মাস্টারমাইন্ড। মহাপরিকল্পনাকারী মহান রাব্বুল আলামিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে কোনো মাস্টারমাইন্ড আমরা বিশ্বাস করি না।

নিজ দলের প্রতি অবিচারের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, আইনের অঙ্গনে এসে যারা বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছে, প্রধান বিচারপতির দরজায় এসে লাথি দিয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাদের সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিল। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদের ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আমরা অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট। সবগুলো খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ’২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ।

ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ আমাদের সবার-মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের দেশে মেজরিটি-মাইনরিটি একেবারেই মানি না। বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তারা এ দেশের মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারও ওপর জোর খাটানোর কোনো অধিকার রাখে না। এখানে মেজরিটি-মাইনরিটি বলে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের ভাই-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে। আর দোষ দেওয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্ট করে নাম-ঠিকানা দিয়ে আমাদের সাহায্য করুন। আপনাদের কথা দিচ্ছি, ন্যয়বিচার আমরা আপনাদের হাতে তুলে দেব। আমরা নিশ্চিত এই অপকর্মের সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীসহ দলের শীর্ষ নেতারা।