ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবৈধ অস্ত্রসহ আটক সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী জেল হাজতে

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ০৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • ১৫ ভিউ

বরগুনার বেতাগী উপজেলা পরিষদ নিবার্চনকে কেন্দ্র করে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) ও সাত রাউন্ড গুলিসহ বেতাগী থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়া সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু সিকদার ও তার গাড়ী চালক মো. সজিবকে(৩৫) অবশেষে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন পুলিশ। বিষয়টি বেতাগী থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান নিশ্চিত করেন।

তবে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও গাড়ী চালককে আটকের সতের ঘন্টা সময় ক্ষেপণের পর মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনায় উপজেলাব্যাপী চলছে নানা সমালোচনা। স্থানীয় অনেকেই বলছেন পুলিশের সাথে আটক হওয়া চেয়াম্যান প্রার্থী ও তার স্বজনদের মধ্যে রফাদফার জন্যই এতটা সময় অতিক্রম হয়। পরে রফাদফার বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে পুলিশ তাড়াহুঁড়ো করে মামালা রুজু করেন এবং অসামীদের জেল হাজতে পাঠান। তবে পুলিশের দাবী নিবার্চনকালীন মুহুর্তকে গুরুত্ব দিয়ে  ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন তারা।  

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেতাগী উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু সিকদার ও তার গাড়ী চালক দ্রুতগতিতে একটি প্রাইভেট কার যোগে বেতাগী পৌরশহরের কাছে বেইলী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে বেতাগী থানার একটি টিম গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করে। এসময়ে গাড়ির মধ্যে বসে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থীর সিটের পাশ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র (সাত রাউন্ড গুলিভর্তি পিস্তল) উদ্ধার করেন পুলিশ।

এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বেতাগী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ, সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা(বেতাগী উপজেলা) স্বপন সিকদার। তাদের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার ড্রাইভারকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। একই সাথে আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রাইভেট কারটি (ঢাকা মেট্টো— গ/১৯—২৬৫০) জব্দ করা হয়।

এদিকে নিবার্চন কালীন সময়ে এমন ঘটনায় সাধারন ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করা অন্যান্য প্রার্থীরা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন। একইসাথে নিবার্চন কমিশনের কাছে এমন ন্যাক্করজনক ঘটনায় সম্পৃক্ত ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিবার্চনী প্রার্থীতা বাতিলের দাবিও জানান তারা।

এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দিতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে একটি প্রেস ব্রিফিং করেন বেতাগী থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান। তিনি জানান, সোমবার রাতে পুলিশের টহল চলাকালীন সময়ে দ্রুতগতিতে একটি প্রাইভেট কার পুলিশের টহলের গাড়িটি অতিক্রম করলে সন্দেহজনক মনে হয়। ওই সময়ে তল্লাশি করলে গাড়ির মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার চালক থাকাকালীন সিটের নীচ থেকে সাত রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করেন পুলিশ। এ সময় দুই জনকেই আটক করে থানায় আনা হয়। এবং অস্ত্র ও ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয়। আমাদের ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গাড়ীচালক সজিব স্বীকার করেন ওই লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্রটি তার। তিনি আরো বলেন, অনুসন্ধ্যান করলে প্রমান মিলে, যে কাপড়টি দিয়ে অস্ত্রটি মোড়ানো ছিলো ওই কাপড়টি চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিজের পরিহিত। যার বেশ কিছু ছবিও আমাদের হাতে আসে। পরে অস্ত্র আইন(১৯) মোতাবেক মামলা রুজু করা হয়। যেখানে ১নং আসামী গাড়িচালক মো. সজিব ও ২নং আসামী চেয়ারম্যান প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন। পর দুজনকেই জেল হাজতে পাঠানো হয়। তিনি আরো বলেন, নিবার্চনকালীন মুহুর্ত তাই সঠিকভাবে যাচাই—বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় ক্ষেপণ হয়েছে।

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

অবৈধ অস্ত্রসহ আটক সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী জেল হাজতে

আপডেট টাইম ০৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

বরগুনার বেতাগী উপজেলা পরিষদ নিবার্চনকে কেন্দ্র করে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) ও সাত রাউন্ড গুলিসহ বেতাগী থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়া সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু সিকদার ও তার গাড়ী চালক মো. সজিবকে(৩৫) অবশেষে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন পুলিশ। বিষয়টি বেতাগী থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান নিশ্চিত করেন।

তবে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও গাড়ী চালককে আটকের সতের ঘন্টা সময় ক্ষেপণের পর মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনায় উপজেলাব্যাপী চলছে নানা সমালোচনা। স্থানীয় অনেকেই বলছেন পুলিশের সাথে আটক হওয়া চেয়াম্যান প্রার্থী ও তার স্বজনদের মধ্যে রফাদফার জন্যই এতটা সময় অতিক্রম হয়। পরে রফাদফার বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে পুলিশ তাড়াহুঁড়ো করে মামালা রুজু করেন এবং অসামীদের জেল হাজতে পাঠান। তবে পুলিশের দাবী নিবার্চনকালীন মুহুর্তকে গুরুত্ব দিয়ে  ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন তারা।  

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেতাগী উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন লিটু সিকদার ও তার গাড়ী চালক দ্রুতগতিতে একটি প্রাইভেট কার যোগে বেতাগী পৌরশহরের কাছে বেইলী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে বেতাগী থানার একটি টিম গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করে। এসময়ে গাড়ির মধ্যে বসে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থীর সিটের পাশ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র (সাত রাউন্ড গুলিভর্তি পিস্তল) উদ্ধার করেন পুলিশ।

এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বেতাগী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ, সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা(বেতাগী উপজেলা) স্বপন সিকদার। তাদের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার ড্রাইভারকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। একই সাথে আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রাইভেট কারটি (ঢাকা মেট্টো— গ/১৯—২৬৫০) জব্দ করা হয়।

এদিকে নিবার্চন কালীন সময়ে এমন ঘটনায় সাধারন ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করা অন্যান্য প্রার্থীরা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন। একইসাথে নিবার্চন কমিশনের কাছে এমন ন্যাক্করজনক ঘটনায় সম্পৃক্ত ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিবার্চনী প্রার্থীতা বাতিলের দাবিও জানান তারা।

এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দিতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে একটি প্রেস ব্রিফিং করেন বেতাগী থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান। তিনি জানান, সোমবার রাতে পুলিশের টহল চলাকালীন সময়ে দ্রুতগতিতে একটি প্রাইভেট কার পুলিশের টহলের গাড়িটি অতিক্রম করলে সন্দেহজনক মনে হয়। ওই সময়ে তল্লাশি করলে গাড়ির মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার চালক থাকাকালীন সিটের নীচ থেকে সাত রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করেন পুলিশ। এ সময় দুই জনকেই আটক করে থানায় আনা হয়। এবং অস্ত্র ও ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয়। আমাদের ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গাড়ীচালক সজিব স্বীকার করেন ওই লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্রটি তার। তিনি আরো বলেন, অনুসন্ধ্যান করলে প্রমান মিলে, যে কাপড়টি দিয়ে অস্ত্রটি মোড়ানো ছিলো ওই কাপড়টি চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিজের পরিহিত। যার বেশ কিছু ছবিও আমাদের হাতে আসে। পরে অস্ত্র আইন(১৯) মোতাবেক মামলা রুজু করা হয়। যেখানে ১নং আসামী গাড়িচালক মো. সজিব ও ২নং আসামী চেয়ারম্যান প্রার্থী নাহিদ মাহমুদ হোসেন। পর দুজনকেই জেল হাজতে পাঠানো হয়। তিনি আরো বলেন, নিবার্চনকালীন মুহুর্ত তাই সঠিকভাবে যাচাই—বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় ক্ষেপণ হয়েছে।