বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার বেতাগীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাস্তার কয়েক হাজার ইট চুরির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। চুরির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মাসুদ আলম মৃধাসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন পুলিশ, তবে ঘটনার পর এলাকা থেকে লাপাত্তা উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো.সিদ্দিকুর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ইউপি কার্যালয় এলাকায় রাস্তার পুরাতন ইট চুরি করে বিক্রির সময় এলাকাবাসী দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকা থেকে সটকে পরেন ওই বিএনপি নেতা সিদ্দিক। এ ঘটনায় হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শৈলেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় সংশ্লিষ্ট ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ আলমসহ তিনজনকে আসামীকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা হলেন জালাল খলিফা ও রিয়াজ সরদার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন,’ ইউপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে মাটির কাজ চলছে এই সুযোগে রাতের আঁধারে বিএনপি নেতা সিদ্দিক ও স্থানীয় একটি চক্র মিলে রাস্তায় বেছানো হাজার হাজার ইট উত্তোলন করে বিক্রি করেছে। এছাড়াও ওই একই সড়কের বন বিভাগের রোপিত ২৩ টি তালগাছ ও বেশ কয়েকটি আকাশমনি গাছ কেটে নিজের মতো করে আত্মসাত করেছেন বিএনপি নেতা সিদ্দিক। তারা আরো বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন সিদ্দিক জানিয়েছেন ইউএনও তার জিম্মায় রাখতে বলেছেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানান, হোসনাবাদ ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মুক্তা বেগমের স্বামী ওই বিএনপি নেতা সিদ্দিক । দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে স্ত্রীকে প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে অপকর্মের রাজত্ব তৈরি করেছেন তিনি। বিভিন্ন ধরনের ভাতার নামে অর্থ আদায়সহ সরকারি খাস জমি দখল করে কাঁঠ চেরাইয়ের মিল ও বসতবাড়ি নির্মানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিগত দিনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিস্কারও হন ওই বিএনপি নেতা সিদ্দিক।
ইটচুরির বিষয়ে ফোনালাপে বিএনপি নেতা সিদ্দিকুর রহমান জানান,’ হোসনাবাদ ইউপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে পাউবো’র (সড়ক উন্নয়নে মাটির টেকসই বেড়িবাঁধ) নির্মানকাজ চলছে,ওই রাস্তার পুরাতন ইটগুলি মাটির নিচে চাপা পরছিলো। স্থানীয় ইউপি সদস্য বিষয়টি আলাপ করায় ইটিগুলি উঠিয়ে রাখি। ইট বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ইট উঠানোর লেবার খরচের বদলে তাদেরকে তিন-চার হাজার ইট দেয়া হয়েছে। চুরি করে বিক্রি করিনি। তবে উপজেলার বিএনপির একটি গ্রুপ কোণঠাসা করতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি করিয়েছেন।
বেতাগী থানার ওসি মো.মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চুরি করে বিক্রি করা ইটের কিছু পরিমান পুলিশ উদ্ধার করেছেন এবং স্থানীয় এক ব্যক্তির জিম্মায় রাখা হয়েছে। চুরির ঘটনায় চারজনকে আসামী করে মামলা রুজু হয়েছে ইতোমধ্যে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য আসামী পলাতক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, সরকারি রাস্তার ইট চুরির ঘটনায় সকল ধরনের আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকায়(ফৌজদারী অপরাধ) ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনে অতিদ্রুত জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি প্রেরণ করা হবে।