ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেতাগীতে ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম : একবছরেও হয়নি কমিটি

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ০৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ৭ ভিউ

স্বপন কুমার ঢালী

আওয়ামী লীগ নেতাদের সমন্বয়হীনতায় বিলুপ্তির এক বছর পরেও আলোর মুখ দেখেনি বরগুনার বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নয়া কমিটি। কমিটি না থাকায় হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে তাদের পছন্দের কোন প্রার্থী নেই। মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি চান না তারা। দীর্ঘ এক বছর কমিটি বিহীন চলায় স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ভেতর পদ নিয়ে চলছে উত্তেজনা-সংঘাত। লবিং, গ্রুপিং ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। হামলা- মামলার শিকার হয়ে অনেকে জেল খেটেছেন। এনিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে তারা এ কমিটি দিতে পারছেনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির বলেন,’ সাত আট মাস আগে এমপি মহোদয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আমার সাথে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বৈঠক করেছিল। তারা তখন আমাদের কাছে কিছু নাম চেয়েছিল। সে সময়ে আমরা কয়েকজনের নাম লিখে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা কোন কমিটি দেখতে পাইনি।’

জানা গেছে, বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের মে মাসে। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর
মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে বেতাগী উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। এর একমাস পর সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করতে ২৭ অক্টোবর বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মী সভা করে জেলা ছাত্রলীগ। কর্মী সভায় নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত ৭ কার্য দিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত সে সময় জমা দিলেও দীর্ঘ এক বছরেও কোন কমিটি হয়নি। ফলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে আগের পরিচয়ে অংশগ্রহণ করে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনসহ বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার ও বর্তমান সংরক্ষিত নারী সদস্য সুলতান নাদিরা বরগুনা-২ (বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা) আসনে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে গনসংযোগ করছেন। তারা প্রত্যেকেই চাইছেন তাদের পছন্দের লোক বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসুক। মূলত এই কারণে জেলা ছাত্রলীগ বেতাগীতে এখনও কমিটি দিতে পারছে না।

বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিফাত সিকদার বলেন, গত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। সে হিসেবে ছাত্রলীগ অনেক নেতারই কোন সাংগঠনিক পরিচয় নেই। নিজ স্বার্থের জন্য কোন সিনিয়র নেতা হয়তো ছাত্রলীগের কমিটি আটকে রেখেছে। এজন্য আমাদের সংগঠনের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না হলে নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। আর এ সুযোগে অন্য ছাত্র সংগঠন সাংগঠনিক তৎপরতায় এগিয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা বলেন, বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আমরা বারবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলেছি। নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে কমিটি দিতে বিলম্ব হচ্ছে।
তবে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব কমিটি পুনর্গঠন করে ফেলবো।

মেইলে ছবি আছে:
ছবির ক্যা

গতবছরের ২৭ অক্টোবর বরগুনার বেতাগী পৌর অডিটোরিয়ামে উপজেলা ছালীগের কর

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

বেতাগীতে ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম : একবছরেও হয়নি কমিটি

আপডেট টাইম ০৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

স্বপন কুমার ঢালী

আওয়ামী লীগ নেতাদের সমন্বয়হীনতায় বিলুপ্তির এক বছর পরেও আলোর মুখ দেখেনি বরগুনার বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নয়া কমিটি। কমিটি না থাকায় হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে তাদের পছন্দের কোন প্রার্থী নেই। মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি চান না তারা। দীর্ঘ এক বছর কমিটি বিহীন চলায় স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ভেতর পদ নিয়ে চলছে উত্তেজনা-সংঘাত। লবিং, গ্রুপিং ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। হামলা- মামলার শিকার হয়ে অনেকে জেল খেটেছেন। এনিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে তারা এ কমিটি দিতে পারছেনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির বলেন,’ সাত আট মাস আগে এমপি মহোদয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আমার সাথে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বৈঠক করেছিল। তারা তখন আমাদের কাছে কিছু নাম চেয়েছিল। সে সময়ে আমরা কয়েকজনের নাম লিখে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা কোন কমিটি দেখতে পাইনি।’

জানা গেছে, বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের মে মাসে। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর
মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে বেতাগী উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। এর একমাস পর সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করতে ২৭ অক্টোবর বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মী সভা করে জেলা ছাত্রলীগ। কর্মী সভায় নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত ৭ কার্য দিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত সে সময় জমা দিলেও দীর্ঘ এক বছরেও কোন কমিটি হয়নি। ফলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে আগের পরিচয়ে অংশগ্রহণ করে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনসহ বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার ও বর্তমান সংরক্ষিত নারী সদস্য সুলতান নাদিরা বরগুনা-২ (বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা) আসনে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে গনসংযোগ করছেন। তারা প্রত্যেকেই চাইছেন তাদের পছন্দের লোক বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসুক। মূলত এই কারণে জেলা ছাত্রলীগ বেতাগীতে এখনও কমিটি দিতে পারছে না।

বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিফাত সিকদার বলেন, গত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। সে হিসেবে ছাত্রলীগ অনেক নেতারই কোন সাংগঠনিক পরিচয় নেই। নিজ স্বার্থের জন্য কোন সিনিয়র নেতা হয়তো ছাত্রলীগের কমিটি আটকে রেখেছে। এজন্য আমাদের সংগঠনের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না হলে নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। আর এ সুযোগে অন্য ছাত্র সংগঠন সাংগঠনিক তৎপরতায় এগিয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা বলেন, বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আমরা বারবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলেছি। নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে কমিটি দিতে বিলম্ব হচ্ছে।
তবে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব কমিটি পুনর্গঠন করে ফেলবো।

মেইলে ছবি আছে:
ছবির ক্যা

গতবছরের ২৭ অক্টোবর বরগুনার বেতাগী পৌর অডিটোরিয়ামে উপজেলা ছালীগের কর