বেতাগী প্রতিনিধি:
ছেলের সামনেই পুত্রবধূর হাতে মারধর ও জখমের ঘটনায় লাপাত্তা হওয়া সেই ছেলে ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত নয়টায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা থেকে ছেলে শুভ বসু ও পুত্রবধূ জ্যোতিকে আটকের পর গ্রেফতার করেন বেতাগী থানা পুলিশের একটি ইউনিট। বিষয়টি উপ পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা চান মিয়া নিশ্চিত করেন। তিনি আরো বলেন, শাশুড়িকে মারধরের ঘটনায় মামলার পর গাঢাকা দেন ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে শুভ বসু ও পুত্রবধূ জ্যোতি মৃধা। গোপণ সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে জ্যোতির(পুত্রবধূর) বোনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পরলে সংশ্লিষ্ট এলকার উৎসুক জনতার ভীড় জমতে থাকে থানা চত্ত্বরে। অত্যাচারী ছেলে ও পুত্রবধূকে এক নজর দেখতে রাতভোর অপেক্ষা করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী ও প্রতিবেশীরা জানান, পুত্রবধূ ছেলের সামনে বসে এতটা নির্মমভাবে শাশুড়িকে পিটিয়ে জখম করেছে, তাই ওই অত্যাচারীদের এক নজর দেখার জন্যই এত লোক ভীড় করে। প্রতিবেশী সুমন চন্দ্র বলেন, সারা রাতেও আসামীদের থানায় আনা হয়নি। এলাকার লোকজন ক্ষীপ্ত থাকার কারনেই হয়তো পুলিশ গ্রেফতার হওয়া শুভ ও জ্যোতিকে থানা চত্ত্বরে আনেননি। রাত থেকে ভোড় পর্যন্ত শতশত লোক থানা এলকায় উপস্তিত ছিলেন।
মারধরের শিকার ওই বৃদ্ধার ছোট ছেলে শোভন বসু বলেন,‘ মাকে এতটা নির্মমভাবে কিভাবে মারধর করলো একবার জানার জন্য আমিও পিরোজপুর গিয়েছিলাম। কিন্তু বড় ভাই শুভ ও তার স্ত্রী আমাকে মানসিকভাবে দুর্বল করতে কান্নাকাটি করে দেখে চলে এসছি। এমন নির্মম ঘটনার সবোর্চ্চ শাস্তির দাবীও জানান বৃদ্ধার ছোট ছেলে শোভন। এদিকে একটি সূত্র জানান, তাদেরকে রবিবার রাত নয়টায় গ্রেফতার করা হয়, রাত পেরিয়ে সকাল অতিক্রম করলেও, (সোমবার সকাল ৭টার মধ্যেও আনা হয়নি) থানায় আনা হয়নি।
ফ্ল্যাশব্যাক: বরগুনার বেতাগী উপজেলার পৌরশহর এলাকার বাসিন্দা মৃত শিবুলাল বসুর স্ত্রীকে তার বড় ছেলে শুভর সামনেই বেধরক পিটিয়ে জখম করেন পুত্রবধূ জ্যোতি মৃধা। এ ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পরলে এলাকাজুড়ে ভাইরাল হয়, যা বর্তমানে বেতাগীর ‘টক অব দ্যা টাউন।’পরে ছোট ছেলে খবর পেয়ে বাড়িতে এসে মা রিতা রানীকে বরিশাল শের—ই—বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় এবং বেতাগী থানায় নিজে বাদী হয়ে বড় ভাই শুভ ও তার স্ত্রী জ্যোতিসহ মোট চারজনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার খবর পেয়ে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা থেকে স্বস্ত্রীক পালিয়ে যান শুভ বসু। পরে তাদেরকে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বেতাগী থানার (ওসি) মো.মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক যা বর্তমানে বেশ আলোচিত। ইতোমধ্যে প্রধান দুই আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করা হয়েছে, থানা চত্ত্ব এলাকায় উৎসুক জনতার ভড়ি থাকায় থানা চত্ত্বরে আসামীদের এখনো আনা হয়নি। ঘটনায় জড়িত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।