বেতাগী(বরগুনা)প্রতিনিধি
তিব্র তাপদাহের পর সামান্য সময়ের জন্য স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিললেও বিদ্যুৎ না থাকায় সেই স্বস্তি এখন অস্বস্তিতে পরিণত হয়েছে। বরগুনার বেতাগী উপজেলায় টানা প্রায় ১১ ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎ নেই। সোমবার সন্ধ্যা ০৬:০০ টায় উপজেলার পৌর শহরসহ ৭টি ইউনিয়নে একই সাথে বিদ্যুৎ চলে যায়, যার দেখা মিলেনি মঙ্গলবার ভোর ০৪:০০ টায়ও। এতে পুরো উপজেলায় তৈরি হয়েছে এক ভুতুড়ে অবস্থা।
হালকা বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়ার প্রভাবে এমন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উপজেলার ব্যবসায়ী,শিক্ষার্থীসহ দেড় লাখেরও বেশি বাসিন্দা। একটানা লম্বা সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে বিভিন্ন অপারেটরের মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা। বাসা বাড়িতে নষ্ট হচ্ছে ফ্রিজে সংরক্ষণে রাখা পচনশীল খাদ্য সামগ্রী।
উপজেলার একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান,’ আমরা যারা ফ্রিজিং ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল তাদের বহু টাকার আইসক্রিমও চকলেট নষ্ট হয়ে যাবে। মাছ ও মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, লম্বা সময় ধরে বিদ্যুৎহীন থাকার কারণে বরফকলে বরফ তৈরি হবে না, ফলে তাদের ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে যাবে, এ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে তাদের।’ সামান্য বৃষ্টি ও ২০ মিনিটের ঝড়ো বাতাসের পর থেকে পুরো উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন। এ বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র নিন্দার ঝড় তুলেছেন।
এদিকে বেতাগী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে রেখেছেন মোবাইল ফোন। ফলে বিদ্যুৎ না থাকার সঠিক কারণ জানতেও ব্যর্থ হয়েছেন এলাকাবাসী। পৌরশহরের একাধিক বাসিন্দা জানান,’প্রতিদিন অসংখ্যবার লোডশেডিং দেয়া হয়। সোমবার ঝড়ো হওয়া ও বৃষ্টি শুরু হলে বিদ্যুৎ চলে যায়, টানা ১১ ঘণ্টা অতিক্রম হলেও এখনো পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায়নি। জানা যায়নি সঠিক কারণ।
উপজেলার পৌর শহরসহ সাতটি ইউনিয়নের ২০ জন বাসিন্দার সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের তারা বলেন,’বেতাগী পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে খামখেয়ালিপনা সহ অভিযোগের শেষ নেই। তারা যখন ইচ্ছে লোডশেডিং দেন, মিটারের রিডিং না দেখেই মনগড়া তৈরি করেন বিদ্যুৎ বিল। একই সাথে মিটার সংযোগ ও বৈদ্যুতিক পুল পেতে অর্থ উৎকোচের নামে ঘুষ বাণিজ্যতো আছেই। বেতাগী উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত হলেও সেবার মানে একদম শূন্য। কোন ধরনের তথ্য জানতে সামান্যতম অফিসের কাউকে ফোনেও পাওয়া যায় না। রাত গড়িয়ে সকাল হয়ে এসেছে কিন্তু বিদ্যুতের দেখা নেই। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ব্যবহৃত সকল মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ রাখায় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যা ০৬:১৩ মিনিটে বেতাগী উপজেলার সকল ইউনিয়নে বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রতিবেদনটি লেখার সময় মঙ্গলবার ভোর ( ০৪:৪০) মিনিট। এই সময় পর্যন্ত বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়নি উপজেলার কোন স্থানে।