ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২ শতাংশ ভোটও পাননি : কে এই বিএনএম প্রতিষ্ঠাতা খোকন!

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ০৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৬ ভিউ


বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা ২ আসনে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ভোট গ্রহণ। অনুষ্ঠিত এ নিবার্চনে বরগুনা ২  আসনে আ.লীগ প্রার্থীর সাথে নিজ দলের কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন দল থেকে মোট প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনএম) থেকে বরগুনা ২ আসনে নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন কিংস পার্টি খ্যাত দলটির শীর্ষনেতা (প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক) ড. আবদুর রহমান খোকন। তবে নিজ এলকায় তার জনপ্রিয়তা এতটাই ক্ষীণ যে গ্রহন করা ভোটের মধ্যে ২% ভোটও পাননি তিনি। যা নিয়ে নিজ এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। নিবার্চন বিধিমালা অনুযায়ী তিনি নিবার্চনী জামানতও হারাবেন বলে নিশ্চিত ধারণা করছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন অর্থ হাতানোর জন্যই তিনি একটি দল তৈরী করে নিজ এলাকা বরগুনা ২ আসন থেকে নিবার্চনে অংশ নেন। এমনকি আত্মীয়দের ভোটও পাননি তিনি , এমনটাই মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।


কে এই বিএনএম প্রতিষ্ঠাতা খোকন: বরগুনায় ১২ দিনের এমপি হিসেবে খ্যাত আ. রহমান খোকন যার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধিনতা বিরোধি সংগঠনের সক্রীয় সদস্য। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে তৎকালীন বরগুনা—১ আসন (সদর—বেতাগী) আসনে তিনি এমপি হিসেবে নিবার্চিত হন। যিনি সদ্য প্রকাশ পাওয়া কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএম নামক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। ৮০‘র দশকে বরগুনা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক ও তৎকালীন বরিশাল জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন খোকন। কর্মজীবনে বেতাগী ডিগ্রি কলেজে টানা ১৬ বছর শিক্ষকতার পর ওই কলেজেরই অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কয়েক বছর। পরে বিএনপির মূলদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কয়েকবছর। একই বছর সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ১৮ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন। বিজয়ী নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ছিল ৩৬ হাজার ২৫০টি। ফাঁকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও নিজেকে জড়ান খোকন। কিছুদিন পর নিজ এলাকায় উদ্যোক্তা হিসেবে শুরু করেন গুরুর খামার। পরে রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান তৈরী না করতে পেরে ঢাকায় যান তিনি এবং বর্তমানে রাজধানীর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও ডিন হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তবে তার কোনো সময়ই শক্ত অবস্থান ছিলোনা বরগুনা ২ আসনের রাজনৈতিক মাঠে। হঠাৎ করে গত আগষ্টে নিবার্চন কমিশন কতৃর্ক নিবন্ধন পায় খোকনের গঠিত কিংস প্রার্টি খ্যাত বিএনএম দলটি। যা নিয়েও খোকনের নিজ এলাকায় শুরু হয় নানা সমালোচনা। এবার ভোট গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে আবার সমালোচিত হয়েছেন বিএনএম নেতা খোকন।
স্থানীয় একাধিক সাধারণ ভোটার জানান,‘ বিএনএম‘র নেতা আবদুর রহমান খোকন একজন সুবিধাবাদী লোক। ফলে নিজ আত্মীয়দের ভোটও পাননি। তার নিজ শ্যালক সহ পরিবারের একাধিক সদস্য ছিলেন তারই বিপক্ষে। এছাড়াও বিএনএম নামক দলটিকে নিবার্চন কমিশনের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবী জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
ভোটার অধ্যুষিত বরগুনা ২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৪৭টি। এর মধ্যে ১১৪ টি কেন্দ্রে  মোট ভোট গ্রহণ হয়েছে ১,৫৪,৬৮৪ টি। এতে আওয়ামী লীগের(নৌকা প্রতিক) প্রার্থী সুলতানা নাদিরা ভোট পেয়েছেন ১,৪৮,০৩২ টি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনএম (নোঙর) খোকন পেয়েছেন ১৯৫১ টি ভোট। যা মোট প্রদান করা ভোটের ১.২৬ %(শতাংশ)। সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ এতে কোনো ধরণের  সহিংসতা ছাড়াই শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মোট তিনজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অর্থদন্ড করা হয়।

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

২ শতাংশ ভোটও পাননি : কে এই বিএনএম প্রতিষ্ঠাতা খোকন!

আপডেট টাইম ০৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৪


বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা ২ আসনে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ভোট গ্রহণ। অনুষ্ঠিত এ নিবার্চনে বরগুনা ২  আসনে আ.লীগ প্রার্থীর সাথে নিজ দলের কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন দল থেকে মোট প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনএম) থেকে বরগুনা ২ আসনে নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন কিংস পার্টি খ্যাত দলটির শীর্ষনেতা (প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক) ড. আবদুর রহমান খোকন। তবে নিজ এলকায় তার জনপ্রিয়তা এতটাই ক্ষীণ যে গ্রহন করা ভোটের মধ্যে ২% ভোটও পাননি তিনি। যা নিয়ে নিজ এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। নিবার্চন বিধিমালা অনুযায়ী তিনি নিবার্চনী জামানতও হারাবেন বলে নিশ্চিত ধারণা করছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন অর্থ হাতানোর জন্যই তিনি একটি দল তৈরী করে নিজ এলাকা বরগুনা ২ আসন থেকে নিবার্চনে অংশ নেন। এমনকি আত্মীয়দের ভোটও পাননি তিনি , এমনটাই মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।


কে এই বিএনএম প্রতিষ্ঠাতা খোকন: বরগুনায় ১২ দিনের এমপি হিসেবে খ্যাত আ. রহমান খোকন যার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধিনতা বিরোধি সংগঠনের সক্রীয় সদস্য। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে তৎকালীন বরগুনা—১ আসন (সদর—বেতাগী) আসনে তিনি এমপি হিসেবে নিবার্চিত হন। যিনি সদ্য প্রকাশ পাওয়া কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএম নামক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। ৮০‘র দশকে বরগুনা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক ও তৎকালীন বরিশাল জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন খোকন। কর্মজীবনে বেতাগী ডিগ্রি কলেজে টানা ১৬ বছর শিক্ষকতার পর ওই কলেজেরই অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কয়েক বছর। পরে বিএনপির মূলদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কয়েকবছর। একই বছর সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ১৮ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন। বিজয়ী নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ছিল ৩৬ হাজার ২৫০টি। ফাঁকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও নিজেকে জড়ান খোকন। কিছুদিন পর নিজ এলাকায় উদ্যোক্তা হিসেবে শুরু করেন গুরুর খামার। পরে রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান তৈরী না করতে পেরে ঢাকায় যান তিনি এবং বর্তমানে রাজধানীর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও ডিন হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তবে তার কোনো সময়ই শক্ত অবস্থান ছিলোনা বরগুনা ২ আসনের রাজনৈতিক মাঠে। হঠাৎ করে গত আগষ্টে নিবার্চন কমিশন কতৃর্ক নিবন্ধন পায় খোকনের গঠিত কিংস প্রার্টি খ্যাত বিএনএম দলটি। যা নিয়েও খোকনের নিজ এলাকায় শুরু হয় নানা সমালোচনা। এবার ভোট গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে আবার সমালোচিত হয়েছেন বিএনএম নেতা খোকন।
স্থানীয় একাধিক সাধারণ ভোটার জানান,‘ বিএনএম‘র নেতা আবদুর রহমান খোকন একজন সুবিধাবাদী লোক। ফলে নিজ আত্মীয়দের ভোটও পাননি। তার নিজ শ্যালক সহ পরিবারের একাধিক সদস্য ছিলেন তারই বিপক্ষে। এছাড়াও বিএনএম নামক দলটিকে নিবার্চন কমিশনের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবী জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
ভোটার অধ্যুষিত বরগুনা ২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৪৭টি। এর মধ্যে ১১৪ টি কেন্দ্রে  মোট ভোট গ্রহণ হয়েছে ১,৫৪,৬৮৪ টি। এতে আওয়ামী লীগের(নৌকা প্রতিক) প্রার্থী সুলতানা নাদিরা ভোট পেয়েছেন ১,৪৮,০৩২ টি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনএম (নোঙর) খোকন পেয়েছেন ১৯৫১ টি ভোট। যা মোট প্রদান করা ভোটের ১.২৬ %(শতাংশ)। সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ এতে কোনো ধরণের  সহিংসতা ছাড়াই শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মোট তিনজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অর্থদন্ড করা হয়।