ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেতাগীতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভিযোগের তদন্ত করেন নিজেই

  • প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৩
  • ৮ ভিউ

ডা. ফাহমিদা লস্কর (ইউএইচএফপিও) বেতাগী,বরগুনা।

বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের দুর্নীতি ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সিভিল সার্জন ও পরিচালকের কাযার্লয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তদন্ত কমিটি, এছাড়াও দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন বদলীর আবেদন করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। যদিও সেটি পরে গোপন করে রেখেছেন সিভিল সার্জন অফিসে এমনটাই জানিয়েছেন বেতাগী হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র। এদিকে ঘুস গ্রহণের ভিডিও ভাইরালের পর নিজ গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্তের কাজও করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেই। তবে এ ঘটনায় কোনো ধরনের মন্তব্য করতে নারাজ তদন্ত কমিটি।


অভিযোগ উঠেছে, ফাহমিদা লস্কর ঘুস বানিজ্যসহ বেতাগীতে নিজের সুরক্ষাসহ দুর্নীতির পক্ষে সাফাই দিতে গঠন করেছেন ক্যাডার বাহীনি। ওই ক্যাডার দিয়েই তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে জোর করে ধরে সকল অভিযোগ মিথ্যা, এই মর্মে স্বীকারক্তিমূলক ভিডিওবার্তা মোবইলে ধারণ করেন ফাহমিদা লস্কর। এ সংক্রান্ত ওই অফিস কক্ষের মধ্যের আরেকটি ভিডিও এসেছে বেতাগী টুডে’র প্রতিনিধির কাছে। এছাড়াও তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই অভিযোগের মূল কপি দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লস্করকে, এমনটাই জানান মারধরের স্বীকার অভিযোগকারী আসমা বেগম। তবে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) বলছেন কেবলমাত্র অভিযোগের একটি ফটোকপি লস্করকে দিয়েছেন তিনি।


জানা যায়, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস গ্রহণের ভিডিও ভাইরালের পর তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়, পরে ওই একই ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের(স্বাস্থ্য) কার্যালয়। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন, স্বাস্থ্য কর্মর্তার বিরুদ্ধে অকট্য সব প্রমান থাকার পরও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নামেমাত্র তদন্ত করেছেন গঠিত তদন্ত কমিটি। স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুর্নীতি ঢাকতে স্থানীয় পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন ও বিএনপি নেতা(ঔষধ ব্যবসায়ী) মো. মামুনকে দিয়ে তৈরী করেছেন ক্যাডার বাহিনী। অর্থের বিনিময়ে ঘুস গ্রহণের ভিডিও থাকার পরও নিরব তদন্ত কমিটি।


মারধরের স্বীকার গৃহকর্মী আসমা বেগম বলেন, আমাকে মারধরের পর ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমাকে চাকরী থেকে বের করে দেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। হাসপাতালের মধ্যে আরো ছয়জন ডাক্তারের রান্নার কাজ করতাম তাদের বলেও আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং হাসপাতালে ঢুকতেই নিষেধ করেছেন। অভিযোগ দেয়ার দুইদিন পর আমাকে স্থানীয় শাহিন ও মামুন নামের দুইলোক এসে আমাকে টেনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যান। তখন তিনি অভিযোগের মূলকপি দেখিয়ে বলেন, তুই অভিযোগ দিয়ে আসছো আর ইউএনও সেটির মূল কপিই আমাকে দিয়ে দিয়েছে। অযথা ঝামেলায় জড়াস না, তারা (ক্যাডার—শাহিন ও মামুন) যা বলে তাই শোন ভালো হবে। এরপর আমাকে যা বলতে বলে তাই বলি, এবং তারা মোবাইলে তা ভিডিও করেন।


এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের সাথে কথা বলতে বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। পরে কথা হয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারধরের ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) ফারুক আহমেদের সাথে তিনি বলেন,‘ গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনার তদন্ত আমি নিজেই করবো। অভিযোগকারীকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তার অফিস কক্ষে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন কিনা! জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ

মন্তব করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল

বেতাগীতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভিযোগের তদন্ত করেন নিজেই

আপডেট টাইম ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের দুর্নীতি ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সিভিল সার্জন ও পরিচালকের কাযার্লয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তদন্ত কমিটি, এছাড়াও দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন বদলীর আবেদন করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। যদিও সেটি পরে গোপন করে রেখেছেন সিভিল সার্জন অফিসে এমনটাই জানিয়েছেন বেতাগী হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র। এদিকে ঘুস গ্রহণের ভিডিও ভাইরালের পর নিজ গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্তের কাজও করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেই। তবে এ ঘটনায় কোনো ধরনের মন্তব্য করতে নারাজ তদন্ত কমিটি।


অভিযোগ উঠেছে, ফাহমিদা লস্কর ঘুস বানিজ্যসহ বেতাগীতে নিজের সুরক্ষাসহ দুর্নীতির পক্ষে সাফাই দিতে গঠন করেছেন ক্যাডার বাহীনি। ওই ক্যাডার দিয়েই তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে জোর করে ধরে সকল অভিযোগ মিথ্যা, এই মর্মে স্বীকারক্তিমূলক ভিডিওবার্তা মোবইলে ধারণ করেন ফাহমিদা লস্কর। এ সংক্রান্ত ওই অফিস কক্ষের মধ্যের আরেকটি ভিডিও এসেছে বেতাগী টুডে’র প্রতিনিধির কাছে। এছাড়াও তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই অভিযোগের মূল কপি দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লস্করকে, এমনটাই জানান মারধরের স্বীকার অভিযোগকারী আসমা বেগম। তবে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) বলছেন কেবলমাত্র অভিযোগের একটি ফটোকপি লস্করকে দিয়েছেন তিনি।


জানা যায়, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস গ্রহণের ভিডিও ভাইরালের পর তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়, পরে ওই একই ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের(স্বাস্থ্য) কার্যালয়। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন, স্বাস্থ্য কর্মর্তার বিরুদ্ধে অকট্য সব প্রমান থাকার পরও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নামেমাত্র তদন্ত করেছেন গঠিত তদন্ত কমিটি। স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুর্নীতি ঢাকতে স্থানীয় পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন ও বিএনপি নেতা(ঔষধ ব্যবসায়ী) মো. মামুনকে দিয়ে তৈরী করেছেন ক্যাডার বাহিনী। অর্থের বিনিময়ে ঘুস গ্রহণের ভিডিও থাকার পরও নিরব তদন্ত কমিটি।


মারধরের স্বীকার গৃহকর্মী আসমা বেগম বলেন, আমাকে মারধরের পর ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমাকে চাকরী থেকে বের করে দেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। হাসপাতালের মধ্যে আরো ছয়জন ডাক্তারের রান্নার কাজ করতাম তাদের বলেও আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং হাসপাতালে ঢুকতেই নিষেধ করেছেন। অভিযোগ দেয়ার দুইদিন পর আমাকে স্থানীয় শাহিন ও মামুন নামের দুইলোক এসে আমাকে টেনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যান। তখন তিনি অভিযোগের মূলকপি দেখিয়ে বলেন, তুই অভিযোগ দিয়ে আসছো আর ইউএনও সেটির মূল কপিই আমাকে দিয়ে দিয়েছে। অযথা ঝামেলায় জড়াস না, তারা (ক্যাডার—শাহিন ও মামুন) যা বলে তাই শোন ভালো হবে। এরপর আমাকে যা বলতে বলে তাই বলি, এবং তারা মোবাইলে তা ভিডিও করেন।


এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের সাথে কথা বলতে বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। পরে কথা হয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারধরের ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) ফারুক আহমেদের সাথে তিনি বলেন,‘ গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনার তদন্ত আমি নিজেই করবো। অভিযোগকারীকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তার অফিস কক্ষে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন কিনা! জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।