বেতাগী(বরগুনা)প্রতিনিধি
বরগুনার বেতাগীতে উপজেলা বিএনপি’র প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপি নেতা অধ্যাপক জাকির হোসাইন। তিনি বেতাগী পৌর বিএনপি’র আহবায়ক ছিলেন। সোমবার বিকাল পাঁচটায় ওই বিএনপি নেতা তার স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন কাঙ্খিত পদ না পাওয়া ও নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারনেই তিনি তার দায়িত্বরত পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। একইসাথে নানা দিক উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সদ্য পদত্যাগ করা ওই বিএনপি নেতা জাকির। এমন একটি ভাইটাল পদ থেকে, হঠাৎ করে একজন ত্যাগী নেতার পদত্যাগ, দলের ওপর বেশ প্রভাব পরতে পারে বলে ধারনা করছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীরা। তবে বেতাগী উপজেলা বিএনপি বলেছেন তার মতো একজন নেতা দল থেকে পদত্যাগ করলে, তাতে দলের কিছুই যাবে আসবে না।
দলীয় সূত্রে জানা যায়,‘ বেতাগী উপজেলা বিএনপির মধ্যে কোনো ধরণের দলীয় সমন্বয় নেই। এক দলের নেতাকমীর্দের মধ্যে একাধিক কোরামে বিভক্ত বেতাগী উপজেলা বিএনপি। ফলে নিজ দলের কোন্দলের কারনেই একট্টা হতে পারেন না এ দলের নেতাকর্মীরা। যেটির বহিঃপ্রকাশ পেয়েছে বিএনপি নেতা জাকির হোসাইনের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে। একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীরা বলেন,‘ বেতাগীতে টাকার বিনিময়ে পদবানিজ্যের ঘটনার পর থেকেই নিজ দলের মধ্যে ফাটল ও কোন্দল দেখা দিয়েছে। ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরা প্রত্যাশীতপদ না পাওয়ার পর থেকেই নিজ নেতাকর্মীদের সমালোচনার মধ্য দিয়ে চলছে বেতাগী উপজেলা বিএনপির রাজনীতি।
এদিকে কেউ কেউ বলছেন মূলত গ্রেফতারের ভয়ে বিএনপি নেতা হঠাৎ করে তার এই পদত্যাগ কারার বিষয়টি সবার সামনে এনেছেন। যাতে তিনি তার নিজ স্বার্থ হাসিল করতে পারেন। আবার কেউ বলছেন সামনে নিবার্চন, বিএনপির বর্তমানে দূর্দিন তাই তিনি আওয়ামীলীগের লোকজনের প্রলোভনে পরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এসকল কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে সদ্য পদত্যাগ করা বেতাগী পৌর বিএনপি নেতা অধ্যাপক জাকির হোসাইন সংবাদমাধ্যমকে আরো জানান,‘ চলমান কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য কিংবা অংশগ্রহণের জন্য আমাকে একবারের জন্যও ফোন পর্যন্ত দেননি দলের কোনো সিনিয়ন নেতৃবিন্দ। এটা আমাকে দলের বাইরে রাখার কৌশলমাত্র। এভাবে এড়িয়ে যাওয়ার পর আমার মতো একজন কর্মীর তো জোর করে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে তাদের সাথে রাজনীতি করা সম্ভব না। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে একটানা ৯ বছর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কও ছিলাম দীর্ঘদিন, কিন্তু আকস্মিকভাবে আমি উপজেলা বিএনপির পদ থেকে হয়ে যাই পৌর বিএনপি নেতা। এটা আমার জন্য বেশ বেমানান ছিলো। এক কথায় উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির ভাইটাল পদদারী নেতাদের কোণঠাঁসার কারনেই বাধ্য হয়ে নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ করেছি। এছাড়া জেলা বিএনপির কমিটি না থাকার কারনে আমি কেন্দ্রীয় বিএনপির দপ্তর সম্পাদক বরাবর লিখিত বিবৃতিটি দাখিল করেছি।
বেতাগী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. হুমায়ন কবির মল্লিক বলেন,‘ বেতাগী উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে জাকির হোসেনের মতো একজন নেতা পদত্যাগ করলে কিছই যাবে আসবে না। তিনি বিগত দিনেও নিজ দলের গোপণীয় বিষয়গুলো অন্যদলের মধ্যে প্রকাশ করে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। এ নিয়ে তাকে বারবার মৌখিকভাবে জানান দেয়াও হয়েছে । তিনি কোন পদের প্রত্যাশা করেছেন এবং কোন পদ তকে সিনিয়র নেতাকর্মীরা দিয়েছেন যে ব্যাপারে তার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, এ বিষয়ে তো আমাদের কিছু করার নেই। তবে তিনি দলকে ভালোবাসলে, দলের সারাদেশব্যাপি নির্দলীয় সরকার গঠনের আন্দোলনের সময়ে তিনি পদত্যাগ করতেন না। আমাদের ধারণা তিনি ভয় পেয়ে কোনো স্বার্থ হাসিলের জন্য এ পদত্যাগের নাটকটি করেছেন।